শেখ রাসেল কারাগারে গিয়ে কি বলতো? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের একটি বড় অংশ কেটে গেছে কারাগারের ভেতরে ৬ দফা দাবি তোলার আগে এবং ছয় দফা দাবি তোলার পরে যখন বঙ্গবন্ধুকে বারবার কারাগারে যেতে হতো তখন তার ছেলে শেখ রাসেল ছিল দুধের শিশু।
বঙ্গবন্ধুর কারাগার জীবন ছিল তার পরিবারের অন্যদের কাছে স্বাভাবিক এর মতো এবং সে কারণে তার দুধের শিশু রাসেলের কাছে এটা ছিল একেবারে নিত্য নতুন অভিজ্ঞতা এবং ১৮ মাসের এই অবুঝ শিশু কারাগার কে আবার বাড়ি বলে কিন্তু কারণ তার বাবা বারবার কারাগারে যেতে।
একারণেই শেখ রাসেল কারাগারে গিয়ে বলতো এটা আমার আব্বার বাড়ি।
বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন তখন তিনি একটি বই লিখেছেন বউয়ের নাম কারাগারের রোজনামচা এবং এই সময় শেখ রাসেলের বয়স ছিল ১২ বছর' ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি পূরণের সময় তখন বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন এবং মে মাসে আবারও গ্রেফতার হন এবং ওই সময় কারাবন্দি দিনগুলো ছিল তা বঙ্গবন্ধু কারাগারের রোজনামচা বইটির উল্লেখ করেছেন।
শেখ রাসেল কারাগারে গিয়ে বলতো এটা আব্বার বাড়ি
বাবার সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে যেতেন এই কারণে সে আরো শিওর হল যে ওটা তার বাবার বাড়ি ছিল তেমনি একটি দিন ১৯৬৬ সালের ১৫ ই জুন শেষ শেখ রাসেল গিয়ে তার বাবাকে দেখতে গেল বঙ্গবন্ধু সেই বর্ণনা করেছেন এইভাবে যে ১৮ মাসের রাসেল জেলা অফিসে এসে একটু হাসে না যে পর্যন্ত আমাকে না দেখতে পায় দেখলাম।
দূর থেকে পূর্বের মতোই আমাকে আব্বা আব্বা বলে চিৎকার করছে এবং জেলগেট দিয়ে একটা মাল বোঝাই ট্রাক ঢুকছিল আমি তাই জানালায় দাঁড়াইয়া ওকে আদর করলাম একটু পরেই ভেতরে যেতে রাসেল আমার গলা ধরে হেসে বলে দিল আমি না আসা পর্যন্ত শুধু জানালার দিকে চেয়ে থেকে বলে আব্বার বাড়ি ছিল এটা।
ওর ধারণা হয়ে গিয়েছে এটা ওর আব্বার বাড়ি এবং জামাত সময়কে ফাঁকি দিতে হয় পরের মাসের 11 ই জুলাই বঙ্গবন্ধু লিখেছেন গেট পার হয়ে রাসেল হাত তুলে আমার কাছ থেকে বিদায় নিল বোধহয় বুঝে গিয়েছে এটা ওর বাবার বাড়ি জীবনভর এখানেই থাকবে সেবার দুটি বঙ্গবন্ধুকে কাটাতে হয়েছিল কারাগারে অবশ্য তার জন্য অভিজ্ঞতা নয় তিনি ধরে নিয়েছিলেন এবারের ঈদ কারাগারে কাটাতে হবে।
তখন বঙ্গবন্ধু লিখেছেন তাই এখনো বুঝতে শিখে নেয় শরীর ভালো না কিছুদিন বলেছেন দেখা করতে এসে রাসেল আমাকে মাঝে মাঝে থাকতে চায় না ওর কাছ থেকে বিদায় নিতে কষ্ট হয় জীবনে বহু এই কারাগারে কাটাতে হয়েছে আর কত কাটাতে হয় তা ঠিক নেই এভাবে ছোট রাসেল দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে কারাগার তার আব্বার বাড়ি।
কে রাসেলকে এক টাকার নোটের বান্ডিল দিতেন?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শেখ রাসেলের জন্মদিনে তাকে এক টাকার বান্ডেল দিত এবং তা সকলকে তিনি উপহার হিসেবে প্রদান করতেন।
শেখ রাসেল গৃহ শিক্ষক এবং তার বিদ্যালয়ের শিক্ষকের মত সবাইকে সম্মান করতেন পড়াতে আসলে গৃহশিক্ষককে দুটো মিষ্টি খেতে হতো আর মিষ্টি না খেলে এসে পড়তো না রাসেল স্মৃতি পরায়ন এবং টুঙ্গিপাড়ায় যখন গ্রামের বাড়িতে যেত তখন ছোট ছোট শিশুদেরকে জোর করে দামি বন্দুক নিয়ে বেড়াতে এসে তাদের খাবার কিনে দিত এবং ঢাকা থেকে তাদের জন্য কাপড় চোপড় কিনে নিয়ে যেত